শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০০৯

মিথ্যার প্রতিবেদন

সবকিছু ফুরালে বসে বাতাস গুনছি-- কোনটা তোমার কানের গা ঘেঁষে এল, কোনটা দূরের বাঁশির, কেশগুচ্ছ তার সুর পান করে বেঁচে থাকে

এই ভরা দুপুরবেলায় বাতাসের যত বাতচিৎ বাঁশঝাড় ঘেঁষে, কাছে দাঁড়ানো ছিলাম বলে ঝরাপাতাদের কাছে সেসবের ঠিকঠাক নোটিশ করেছি, তা না হলে পাতার বেদনা সব থেকে যেত তথ্য-অন্ধকারে, উড়ে উড়ে যেখানে পড়ত গিয়ে, সেখানেই ছড়াত যে, কোনোকালে মিথ্যার সুদীর্ঘ লেজে কেউ আগুন দেখে নি

কথিত গানের মর্ম এরকমই উলুঝুলু, লেজে এক দগদগে ক্ষত নিয়ে মিথ্যারা করে যাচ্ছে প্রাণান্ত সংসার সত্যের প্রতিবেশী হয়ে-- সুর হলো ভালোমন্দ বোঝাপড়া দুইয়ের

২.

রোদের প্রান্তরে কিছু পাণ্ডুলিপি ওড়ে, পিছু ধাওয়া করে তার একদল মৌমাছি শুষে নেয় সৃজনের মধু, রোরুদ্য কঙ্কাল হয়ে পড়ে থাকে বর্ণমালা-- অর্থ ও শাঁসহীন, খোসা

মৌমাছিদের ফিরতি পথে চলে যায় ক্যামেরার চোখ, পড়ে থাকা গুনগুন ধরে, দেখে সুরের পায়ের ছাপ, আমরা এগোতে থাকি, যতক্ষণ না গানগুলো বদলিয়ে নিচ্ছে রূপ কোলাহলে

যেখানে সম্পদ স্থির হয়ে থাকে, সমবেত হল্লা জমে সেখানেই, অন্তত যেখানে চুঁইয়ে নামছে কিছু বলে মনে হয়, যেকোনো নালার ফোঁটা ফোঁটা জল, পিছনে নদীর উৎস নির্দেশ করে-- এইসব মিলেমিশে রচিত হতে পারে আরো কোনো ছায়াঢাকা পাণ্ডুলিপি, মৌমাছিঘটিত ও মধুময়, যার পরে থাকবে না আর কোনো গুনগুন গান, আমাদের কেউ কেউ দলেবলে হাঁটছে ওদিকে

৩.

চোখ যখন ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসতে চায়, তখন তাকে তাই হয়ে যেতে দেয়া ভালো, বড়ো করে তাকাবার জন্যে ক্ষীণদৃষ্টি মুহূর্তদের ছুটি দিয়ে দেয়া ভালো

যাও, ঘুমোও গে চোখ, প্রায়ান্ধ একটা মন নিয়ে আমি খাতা ও কলমে কিছু লোফালুফি খেলি, রাতভর অতন্দ্র সাধনে রচিত হবে যে বাঁধ, তা দিয়ে এমনকি ঠেকানো যেতেও পারে আগামীদিনের ঢেউ, কূল ভেঙে ভেঙে নইলে কখন যে টান পড়ে যাবে ভিটের মাটিতে, ঘুমঘোরে তার শেষে ঠাহরই পাব না

যাও, ঘুমোও গে চোখ, আরেকটু বসেটসে নদী পাড়ি দেব আমি শেষ খেয়া দিয়ে, সাথে রবে আমাদের সুরক্ষা গায়েন

৪.

ঘরে বসে সমুদ্র দর্শন শুধু মানুষই করতে পারে, গরু-ছাগল পারে না, এমনকি হাঙরেরও সমুদ্র দরকার সমুদ্রসিনানে

সমুদ্র তো তুচ্ছ খেল, মানুষ এমনকি মনে মনে মানুষেও করে ওঠে স্নান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন